"লুডো" সিনেমাটি আনুরাগ বসুর একটি ট্রিট বলা যেতে পারে। অনেক দিন যাপত হিন্দি সিনেমা দেখা হচ্ছিলো না। আসলে দেখতেই ইচ্ছে করছিলো না। কারণ বলিউড বোর করে ছেড়েছে। ভাই আর কত! মাসালা আর কত! কিছুটা সেন্স তো থাকা দরকার। তবে অবশ্যই সব ফিল্মের কথা বলছি না। এই সিনেমাটার সবচেয়ে প্লাস পয়েন্ট হলো প্রথম থেকেই এটা অ্যাটেনশন গ্রেব করে ফেলে। আর তারপর থেকে সারপ্রাইজ আর সারপ্রাইজ।
এই সিনেমার স্টোরি টেলিং আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। যদিও আমার কাছে মনে হইসে যদি সিনেমার ডিউরেশন আরও আধা ঘণ্টা কমানো যেতো তাহলে আরও ভালো হতো। আর এই সিনেমার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো পাঙ্কাজ ট্রিপাথি। ভাই রে ভাই, এই লোকটার চেহারাই সিনেমার আকর্ষণ। এক্টিং নিয়ে আর কি বলার! ওওও.....বেটাজি!!!!!অসাধারণ! অনেক দিন পর অভিষেক বচ্চন এর রোল ও অভিনয়ও আমার ভালো লেগেছে।
এই সিনেমাটা মোমেন্ট উপহার দেয়। বিট্টু যখন মিনির পিছন নেয় তখন অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করে। অনেকগুলো কাহিনী একসাথে এগুতে থাকে, সাধারণত এরকম প্যাটার্ন এর স্টোরির ফ্ল্যাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বা সেটা কমেডি হলে আলাদা কথা। কিন্তু লুডো শুধু কমেডি মুভি না। মিথুন চক্রবর্তীর নকল করা রাজকুমার রাও এর অভিনয় আসলেই দেখার মতো ছিলো। হোটেল বয় এর মতো গড়গড় করে এতোবড় সংলাপ শুনতেই মজা লাগে।
সিনেমাটি দেখে একটা বিষয় বুঝলাম গান যত কম হবে আর আবহসঙ্গীত যত ভালো হবে ততই মুভি দেখতে সুন্দর হবে। কালার গ্রেডিং তো অবশ্যই বিশাল বড় ফ্যাক্ট।
আমরা নিজেদের জীবনটাকে নিজেদের পারস্পেক্টিভ থেকে দেখা ছাড়া অন্যভাবে ভাবতে পারি না। পাপ আর পুণ্য ব্যাপারটা তাই আমাদের কাছে একরোখা। পাপ দেখলেই পুণ্য থেকে তা আমরা মাইনাস করি। কিন্তু ব্যাপারটা কি এমন নয় যে পুণ্য এক লাইনে আর পাপ আরেক, এখন দেখার বিষয় হলো কার কোন লাইনটা বড়! যাই হোক সিনেমাতে এই ব্যাপারটাতে কিছু কথা রয়েছে। যদিও তা কিছুটা অফলাইনেই থাকে।
বাচ্চা লালন পালন মোটেই সহজ কাজ নয়। যান্ত্রিক জীবনে যেনো মিনির মতো কোনো মেয়েকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না হয় যে বাবা মা কে শাস্তি দিতে হবে। এখনকার সময়ের এই অঞ্চলের এটা একটা বিশাল ইস্যু। বেশিরভাগ সময়ই বাবা মা রা তাদের কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করছেন না কিন্তু তারা এ বিষয়ে অজ্ঞ। অনেক ক্ষেত্রে মানতেও চাচ্ছেন না। প্যারেন্টিং নিয়ে পাঠ্যপুস্তক বইয়ে একটা আলাদা চ্যাপ্টার খুলা উচিৎ। তা না হলে মনে হয় না এই সমস্যার সমাধান হবে। দিন দিন বাড়ার প্রবণতাই বৃদ্ধি পাবে।
সিনেমাটা বিনোদনে ভরপুর। এখান থেকে কিছু শিক্ষা না নেওয়াই ভালো। মজা করে মোটামোটি ফ্যামিলি নিয়ে অন্তত একবার দেখা যেতেই পারে। আমি নিজে দুইবার দেখেছি। যদিও দ্বিতীয় বার ধৈর্য হারাচ্ছিলো।
Comments