top of page
Search
Writer's pictureRahat Ahmed

Manto (2018)


সাদত হাসান মান্টো! খুবই সাধারণ, সাদা সিধা লেখক, চিত্রনাট্যকার, বাস্তববাদী। খুব বেশি কিছু জানা নেই এ লেখক সম্পর্কে, শুধু একটা বই পড়া হয়েছে। জাভেদ হুসেন অনুবাদে বাংলায় যার নাম "কালো সীমানা"। এখানে অনেকগুলো একদম ছোট ছোট গল্প রয়েছে। যা কবিতা নয় কিন্তু কবিতার থেকে নন্দিত, যা উপন্যাস নয় কিন্তু তার থেকেও ভয়ংকর। সমাজের ভিতরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লেগে থাকা বিরাট সত্যকে দুই তিন লাইনের কম্পোজিশনে এনে তাতে পুরো জাতির বিবেককে নাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা মনে হয় না খুব একটা আছে বা ছিলো অন্য লেখকদের মাঝে। "Manto" সিনেমাটি তিন বছর আগে মুক্তি পেলেও তখন খুব একটা আগ্রহ অনুভব করিনি সিনেমাটা নিয়ে। লেখককে চিনতাম না বলেই হয়তোবা। এখনো যে খুব একটা তথ্য জানতে পেরেছি তাও নয়। তবে এতোটুকু বুঝতে পেরেছি উনার ছোটগল্পের ধাঁর ধারালো দা অপেক্ষা তীক্ষ্ণ। সাদত হাসান মান্টোর একটি ছোট গল্প নিচে উল্লেখ করছি।


বিশ্রাম

"আরে মরেনি! এখনো বেঁচে আছে!"

"থাক দোস্ত...খুব ক্লান্ত হয়ে গেছি!"


সিনেমাটি নিয়ে প্রথমেই আমি পরিচালক নন্দিতা দাসকে অভিনন্দন জানাতে চাই! কেননা ছবিটা খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। আমরা সিনেমা দেখে সবসময়ই কিছু না কিছু অনুভব করতে চাই, সিনেমার বক্তব্যের সাথে নিজের অজান্তেই নিজেকে ইমোশনালি কানেক্ট করতে চাই। এখানে পরিচালকের একটা বিশাল সুযোগ থাকে যে যেকোনো কাহিনীকে মহান করে তুলে ধরার। সাদত হাসান মান্টো তো একজন মানুষ, তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাও অন্যান্য জীবনের ঘটনার সমতুল্য। মান্টো তার লেখনী দিয়ে হইতো অমর হয়ে রইলেন, কিন্তু তার জীবনটাকে অতিরঞ্জিত করার কিছু নেই, যা এই সিনেমায় ঘটে নি। সুন্দর সাবলীল ঘটনা সুন্দরভাবে গুছিয়ে বলা হয়েছে এই আর কি।


প্রথমবার যখন মুভিটি দেখছিলাম বার বার মনে হচ্ছিলো আমি মনে হয় অনেক কিছু মিস করছি বা বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছিলো ডায়লগটা আরেকবার শুনা উচিৎ, না হলে মনে হয় গুরুত্বটা ধরতে পারবো না। দেখতে দেখতে সিনেমা শেষ হয়ে গেলো, মনে হতে থাকলো যে কিছুই তো ধরতে পারলাম না। আবারও দেখতে হবে। আবার দেখলাম এবার মনে হচ্ছে, আর কিছুই মনে হয় ধরার নেই। তবুও আরেকবার দেখে শিওর হয়ে নেওয়া উচিৎ। আসলে আমি বুঝতে পারলাম এই সিনেমাটি আমি বার বার দেখতে পারবো যদি বেশি না ধরতে চাই। আমার মনে হয় যারা সাদত হাসান মান্টোকে চিনেন, তাদের জন্য এই ছবিটি একবার হলেও দেখা উচিৎ।


দেশভাগের সময় ১৯৪৭ সালে অনেক হিন্দু মুসলমানকে তাদের নিজ বাড়ি বা যাকে বলা যায় ভিটা মাটি ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে বসতি গড়তে হয়েছে। কারণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আর ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ। ব্যাপারটা একবার এভাবে ভেবে দেখলে কেমন হয়, মনে করুন আপনার দেশের বাড়ি বরিশাল, জন্ম হয়েছে ঢাকায়, ছোটবেলা থেকে ঢাকাই থাকলেন বড় হলেন পড়ালেখা শেষ করলেন এখানেই কর্ম করলেন, হঠাৎ রাজনৈতিক ডামাডোলে ঢাকা অন্য দেশে পরে গেলো। আপনাকে কুমিল্লা পাঠিয়ে দেওয়া হলো, শুধু তাই না ঢাকা না ছাড়লে মৃত্যুর হুমকিও পেলেন, ঢাকা হয়ে গেলো নিষিদ্ধ। আমি জানি না অন্যদের কি অবস্থা হবে কিন্তু আমার জন্ম ঢাকায়, ছোটবেলা এখানেই কাটলো, বড়বেলা এখানেই কাটবে আশা করি, আমি তো এমন ভাগ মেনে নিতে পারবো না। সাদত হাসান মান্টোও ঠিক তাই মেনে নিতে পারেন নি।


এই সিনেমাটির সবচাইতে শক্ত খুঁটি ছিলো এতে পারফর্ম করা অভিনেতারা। নাউয়াজ্জুদ্দিন সিদ্দিকী কতটা দক্ষতার সাথে তার অংশটি উপস্থাপন করেছেন তা তার পুরো সিনেমাজুড়ে ট্রান্সফোরমেশন দেখলেই বুঝা যায়। একজন এক্টর কতটুকু ডেডিকেটেড হতে পারে তা নাউয়াজ্জুদ্দিন সিদ্দিকীকে দেখলেই বুঝা যায়। আমি বলছি না যে এখানে ম্যাজিক ছিলো, হেন ছিলো, তেন ছিলো, তবে অভিনয়ে শতভাগ সত্যতা ছিলো। এছাড়াও এখানে আমার দুইজনের ক্যামিও রোল অনেক বেশি আকর্ষণ করেছে, পারেশ রাওয়াল এবং ঋষি কাপুর। আর সত্যিকারের ম্যাজিক ছিল মান্টোর সহধর্মিণীর পাঠটি যিনি করেছেন, সত্যিই দুর্দান্ত, উনার নাম জানা নেই।


ন্যারেশন এর কথায় একটা বিষয় বলতে চাই যে সিনেমার মধ্যখানে মধ্যখানে ছোট গল্পগুলো জুড়ে দেওয়ার কনসেপ্ট খুবই ভালো লেগেছে, বিশেষ করে পারেশ রাওয়াল যখন স্ক্রিনে প্রবেশ করলেন, তখন একধরনের মোহ কাজ করে। গল্প বলায় যেমন পারস্পেক্টিভ একটা শক্ত বিষয়, তেমনি তাকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে রহস্যময় বা আনন্দময় করে তোলাটাও শক্ত, দর্শককে তো আর বোর করা যাবে না।



149 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


Post: Blog2_Post
bottom of page